আলীকদম | |
---|---|
উপজেলা | |
বাংলাদেশে আলীকদম উপজেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২১°৪০′১৭″ উত্তর ৯২°১৮′৫″ পূর্বস্থানাঙ্ক: ২১°৪০′১৭″ উত্তর ৯২°১৮′৫″ পূর্ব | মানচিত্র | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | বান্দরবান জেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৭৬ |
সংসদীয় আসন | ৩০০ পার্বত্য বান্দরবান |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | বীর বাহাদুর উশৈ সিং (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) |
আয়তন | |
• মোট | ৮৮৫.৭৮ কিমি২(৩৪২.০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩৫,২৬৪ |
• ঘনত্ব | ৪০/কিমি২ (১০০/বর্গমাইল) |
স্বাক্ষরতার হার | |
• মোট | ২৭.২০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৬৫০ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট |
আলীকদম বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
আলীকদম উপজেলার আয়তন ৮৮৫.৭৮ বর্গ কিলোমিটার।[১] এটি বান্দরবান জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা।
বান্দরবান জেলার দক্ষিণাংশে ২১°২১´ থেকে ২১°৫০´ উত্তর অক্ষাংশ ৯২°১৫´ থেকে ৯২°৩৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে আলীকদম উপজেলার অবস্থান।[১] বান্দরবান জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ১১১ কিলোমিটার।[২] এ উপজেলার পূর্বে ও উত্তর-পূর্বে থানচি উপজেলা, উত্তর-পশ্চিমে লামা উপজেলা, পশ্চিমে ও দক্ষিণ-পশ্চিমে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ও দক্ষিণে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশঅবস্থিত।
ধারণা মতে, আলোহক্যডং থেকে আলীকদম নামের উৎপত্তি। বোমাং সার্কেল চীফের নথি পত্র ও ১৯৬৩ সালের তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানসরকার কর্তৃক আঁকা মানচিত্রে আলোহক্যডং নামের সত্যতা পাওয়া যায়। বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গবেষক আতিকুর রহমান এর মতে আলী পাহাড়ের সাথে সঙ্গতিশীল নাম হল আলীকদম। তাছাড়া কথিত আছে যে, ৩৬০ আউলিয়া এ উপমহাদেশে ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে আলী নামে কোন এক সাধক এ অঞ্চলে আসেন। ওনার পদধুলিতে ধন্য হয়ে এ এলাকার নাম করণ হয় আলীকদম।
পূর্ববর্তী সময়ে এটি লামা উপজেলার একটি ইউনিয়ন ছিল। ১৯৭৬ সালে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার কিছু এলাকা নিয়ে আলীকদম থানাপ্রতিষ্ঠা করা হয়।[১] ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের ফলে এটি উপজেলায় অধিষ্ঠিত হয়।[৩] এ উপজেলায় বর্তমানে ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ আলীকদম উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম আলীকদম থানার আওতাধীন।
আলীকদম উপজেলা পার্বত্যাঞ্চলের ইতিহাসের উপজীব্য। এখানকার বিলুপ্তপ্রায় আলীর সুড়ঙ্গ ছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন পুকুর। তাছাড়া এখানকার নয়াপাড়া গ্রামে প্রাচীন ইটভাটার অস্তিত্ব এখনো বিদ্যমান, যা বর্তমানে নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন বসতভিটা। ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক গ্রন্থপ্রণেতা গবেষক আতিকুর রহমান সহ স্থানীয় সাংবাদিকরা ঐ এলাকায় মাটি খুঁড়ে ইট আবিস্কার করেছেন। আবিস্কৃত ইটগুলোর গঠনপ্রণালীতে সুলতানী আমলের ইট বলে অনুমিত হয়। উদ্ধারকৃত ইটগুলোর দৈর্ঘ্য সাত ইঞ্চি, প্রস্থ সাড়ে চার ইঞ্চি আর পুরু দেড় ইঞ্চি মাত্র। আবিস্কৃত ইটগুলো বর্তমানে আলীকদম প্রেসক্লাবে রক্ষিত আছে।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী আলীকদম উপজেলার জনসংখ্যা ৩৫,২৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১৯,২৯০ জন এবং মহিলা ১৫,৯৭৪ জন।[১] মোট জনসংখ্যার ৫৮.৮১% মুসলিম, ৪.৩০% হিন্দু, ৩০.৯৬% বৌদ্ধ এবং ৫.৯৩% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।[১]
এ উপজেলায় মার্মা, ত্রিপুরা, মুরং, চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা উপজাতির বসবাস রয়েছে।[১]
আলীকদম উপজেলা শিক্ষাক্ষেত্রে খুবই অনগ্রসর জনপদ। এ উপজেলার স্বাক্ষরতার হার ২৭.২০%।[১] এ উপজেলায় ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি দাখিল মাদ্রাসা, ১টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[৪]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
আলীকদম উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান প্রধান সড়কগুলো হল বান্দরবান-থানচি-আলীকদম, বান্দরবান-লামা-আলীকদম এবং চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়ক। প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম পূর্বাণী চেয়ারকোচ এবং জীপগাড়ি।
আলীকদম উপজেলায় ৩৮টি মসজিদ, ৫টি মন্দির, ১৭টি বিহার এবং ৩টি গীর্জা রয়েছে।[১]
আলীকদম উপজেলার পাহাড়ী-বাঙ্গালী জন সমাজের ঘূর্ণিয়মান অর্থনীতির চাকা এখনো ধীরলয়ে চলছে। বসবাসরত সিংহভাগ লোকজন অর্থনৈতিকভাবে সুযোগসুবিধা এখনো পায়নি। পাহাড়ী ভূমিতে জুম চাষ করে অধিকাংশ উপজাতীয় লোকজন জীবিকা নির্বাহ করেন। সেই আদিম পদ্ধতিতে জুম চাষের মাধ্যমে জীবিকা আহরণ করে এলাকার সবুজ পাহাড়কে শ্মশানের ছাইয়ে পরিণত করলেও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসেনি তাদের। অপরদিকে, বাঙ্গালী জনসমাজেও খেটে খাওয়া লোকের সংখ্যা বেশী। পাহাড়ের বাঁশ-কাঠ কেটে জঠর জ্বালা মিটালেও তাদের অর্থনীতির চাকা মাঝে মধ্যে থমকে দাঁড়ায় পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিধি-নিষেধের কারণে।
আলীকদম উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মাতামুহুরী নদী। এছাড়া রয়েছে তৈন খাল এবং চৈক্ষ্যং খাল।[২]
সংসদীয় আসন
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৫] | সংসদ সদস্য[৬] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
৩০০ পার্বত্য বান্দরবান | বান্দরবান জেলা | বীর বাহাদুর উশৈ সিং | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন
ক্রম নং | পদবী | নাম |
---|---|---|
০১ | উপজেলা চেয়ারম্যান[৭] | মোহাম্মদ আবুল কালাম |
০২ | ভাইস চেয়ারম্যান[৮] | কাইন থপ ম্রো |
০৩ | মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান[৯] | বেগম শিরিনা আক্তার |
০৪ | উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা[১০] | মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান |
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস